বৃহস্পতিবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৪, ০১:২০ পূর্বাহ্ন
ক্রাইমসিন ডেক্সঃ
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের মহাসচিব মাওলানা মুহাম্মাদ মামুনুল হক সমমনা সব দলকে উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, এখনই আমাদের পারস্পরিক প্রতিযোগিতা, প্রতিদ্বন্দ্বিতা, বিভেদে লিপ্ত হওয়ার সময় হয়নি। বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ বিগত দিনের বিরোধী রাজনৈতিক দল বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, খেলাফত মজলিস, জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশ, এলডিপি, এনডিপি, গণঅধিকার পরিষদসহ সব রাজনৈতিক দল এবং তাদের নেতাদের আমি উদাত্ত আহ্বান জানাবো, এ ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে রাজপথে গড়ে ওঠা আমাদের ঐক্যকে সিসাঢালা প্রাচীরের মতো মজবুত রাখতে হবে।
তিনি আরও বলেন, দেশপ্রেমিক জনতা যদি ঐক্যবদ্ধ থাকে বিদেশি কোনো প্রভুদের প্রশ্রয়ে সেই ফ্যাসিবাদ বাংলাদেশে আর নতুন করে ফিরে আসার সুযোগ পাবে না। কিন্তু আমরা যদি দ্বিধা বিভক্ত হই, আমাদের আবার কোনো ভিনদেশি শক্তির হাতে এ দেশের স্বাধীনতাকে ইজারা রাখতে হবে। কাজেই সেই দিন আমরা দেখতে চাই না।
বুধবার (২৩ অক্টোবর) বরিশাল নগরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস আয়োজিত শাপলা চত্বরে হেফাজতে ইসলামের আন্দোলন ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গণহত্যার বিচারের দাবি এবং নৈরাজ্যবাদ প্রতিরোধে গণসমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন তিনি।
এ সময় তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্র এবং সরকারকে বলবো, সব রাজনৈতিক দলগুলোর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করুন। তাদের সহযোগিতা নিশ্চিত করুন এবং যত দ্রুত সম্ভব হয় আগামী দিনের রোডম্যাপ ঘোষণা করুন। অনির্দিষ্ট কালের জন্য, অনন্তকালের জন্য ক্ষমতায় বসে থাকার কোনো বাসনা আপনাদের পেয়ে না বসে, সেজন্য সজাগ থাকতে হবে।
তিনি বলেন, দ্রব্যমূল্য মানুষের ক্রয়ক্ষমতার নাগালের বাইরে কিন্তু আগস্ট বিপ্লবের সম্মানার্থে বিগত ফ্যাসিবাদের হাত থেকে মুক্তির সুবাদে এ সরকার এবং সহযোগীদের এখন পর্যন্ত বিনাশর্তে বাংলাদেশের মানুষ সহযোগিতা এবং সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে।
কিন্তু আপনারা যদি মনে করেন এ সমর্থন অনন্তকালের জন্য থাকবে তাহলে আপনারা ভুল করবেন। রাজনৈতিক সংলাপ ডাকুন। শুধুমাত্র লোক দেখানোর জন্য আনুষ্ঠানিক সংলাপ নয়।
সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আপনারা সমন্বয় মজবুত করুন, সবার সঙ্গে ইন্টারনাল-এক্সটারনাল সব ধরনের যোগাযোগ বৃদ্ধি করে সবার সহযোগিতা নিয়ে এ সরকারকে সাফল্যমণ্ডিত করতে হবে। মনে রাখতে হবে এ সরকার ব্যর্থ হলে আগস্ট বিপ্লবের সুফল বাংলার মানুষ ঘরে তুলতে পারবে না। যেকোনো মূল্যে আগস্টের বিপ্লবকে সফল রাখতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা বলি এ বিপ্লবের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ প্রমাণ করেছে এ দেশের মানুষের হৃদয়ের গহীনে সবচেয়ে গভীরভাবে যে ভালোবাসা লুকিত রয়েছে সেটা হলো ইসলাম, আল্লাহ ও তার রসুলের প্রতি প্রেম আর ভালোবাসা।
এজন্য একাত্মবাদ এবং তৌহিদের বিরুদ্ধে গোটা বাংলাদেশ জুড়ে যে শেরেকি সংস্কৃতি বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করেছিল শেখ হাসিনা, ৫ আগস্টের প্রথম প্রহরেই তার শেরেকের সব আস্তানা বাংলার মানুষ গুঁড়িয়ে দিয়েছে।
এ দেশের মানুষ ইসলামকে ভালোবাসে, ইসলামের জন্য জীবন দিতে তারা স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে।
মামুনুল হক বলেন, আমরা চাই বৈষম্যহীন বাংলাদেশ, আমরা চাই ইনসাফপূর্ণ বাংলাদেশ। মানব খচিত তন্ত্র মন্ত্র দিয়ে কস্মিনকালেও পূর্ণাঙ্গ বৈষম্যহীন ইনসাফপূর্ণ সমাজ গড়া সম্ভব হবে না।
এজন্য আল্লাহর জমিনে আল্লাহর দেওয়া রাজনৈতিক বন্দোবস্ত বাস্তবায়ন করতে হবে। আল্লাহর দেওয়া সেই রাজনৈতিক বন্দোবস্তের একমাত্র নাম এবং শিরোনাম হলো খেলাফত ব্যবস্থা।
অর্থাৎ আইন দেবেন আল্লাহ শাসন করবেন শাসক। শাসক হবে আল্লাহর প্রতিনিধি। সেই প্রতিনিধি জনগণের কল্যাণে নিয়োজিত হবে, আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রদত্ত আইনের দ্বারা মানুষের সকল বৈষম্যকে ধূলিসাৎ করে সাম্য ন্যায় এবং ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করবে। এজন্য আমরা থেমে থাকতে চাই না।
শুধু শেখ হাসিনার ফ্যাসিবাদকে বিদায় করে আমরা আমাদের যাত্রা থামিয়ে দিতে চাই না, আমাদের গন্তব্য বহুদূর, মঞ্জিল বহুদূর। আমরা থামবো সেদিন যেদিন বাংলার সংবিধান হবে আল কুরআন, যেদিন বাংলার মাটিতে বাস্তবায়ন হবে খেলাফত ব্যবস্থা।
বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস বরিশাল জেলার আহ্বায়ক মাওলানা মুহাম্মাদ জোবায়ের গালিবের সভাপতিত্বে গণসমাবেশে কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা বক্তব্য রাখেন।